নিজস্ব প্রতিনিধি: সকাল থেকেই ধাক্কার পর ধাক্কা খেয়ে চলেছে গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার সকালেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন বাংলার চার বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনের দিনক্ষন ঘোষণা করে দিয়ে গেরুয়া শিবিরকে বড় ধাক্কা দিয়ে দিয়েছে। সেই ধাক্কায় বেহাল গেরুয়া শিবির মাটি থেকে উঠে দাঁড়াবার আগেই ধাক্কা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন স্থগিতের আর্জি নিয়ে আদালতে মামলা ঠুকেছিল বিজেপি। কিন্তু এদিন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, নির্দিষ্ট দিনেই ভোট হবে ভবানীপুরে।
ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণার পরে পরেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলে বিজেপি। শুধু অভিযোগ তোলাই নয়, কেন শুধুমাত্র একটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন করানো হচ্ছে না সেই বিষয়ে তাঁরা দলের এক সমর্থককে দিয়ে মামলা দায়ের করে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, শুধুমাত্র কেন একটি কেন্দ্রেই নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। এই মামলায় কমিশনের কাছে জবাবি হলফনামা চেয়েছিল আদালত। কমিশন সেই হলফনামা জমাও দেয়।অকিন্তু তাতে খুশি হয়নি আদালত। একইসঙ্গে মামলাকারীদের তরফে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, ভবানীপুরে উপনির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে, এই মর্মে সুপারিশ করে কমিশনকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যসচিব। ভোট বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনও সেই কথা উল্লেখ করেছে। শুধু মাত্র একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রের জন্য এই ভাবে সুপারিশ করা যায় কি? এই প্রশ্নের জেরেই রাজ্যের মুখ্যসচিব ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে এদিন আদালতও প্রশ্ন তুলেছে।
এদিনের রায়ে আদালত জানিয়েছে, উপনির্বাচনের আবেদন করে কমিশনকে চিঠি লিখে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী ভুল করেছেন। নির্বাচন কমিশনও তাঁর আবেদন গ্রহণ করে ভুল করেছে। তাই তাঁর ও নির্বাচন কমিশনের জরিমানা হবে কিনা তা নিয়ে আগামী ১৭ নভেম্বর শুনানি হবে। তবে ভবানীপুরে নির্দিষ্ট দিনেই ভোট হবে। সেখানে ভোট করাতে কোনও বাধা নেই। তবে সেই ভোটে যারাই হারুক না কেন তাঁরা আদালতে পিটিশন দাখিল করতে পারবে। এই প্রসঙ্গে মামলাকারীদের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যসচিব এক জন সরকারি আধিকারিক। তাই তিনি কোনও এক জনের স্বার্থ রক্ষা করতে পারেন না। নির্বাচনের আবেদন জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছিলেন তাতে তিনি নিজের অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। তিনি ভুল করেছেন। এক জনের স্বার্থ রক্ষার জন্য এত খরচ কে বহন করবে। ১৭ নভেম্বর কমিশনকে জরিমানা সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে। আদালত জানিয়েছে তারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু যে দল হারবে তারা চাইলে ফের পিটিশন দায়ের করতে পারবেন।’