32ºc, Haze
Sunday, 2nd April, 2023 5:16 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: জমিদারির আমলে ছিল পরিবারের বৈভব ও প্রাচুর্য। বর্তমানে জমিদারি না থাকলেও ঐতিহ্য মেনে প্রতি বছর পুজো হয় বড়শুলের দে বাড়িতে। এই গ্রামে মা দুর্গা পূজিত হন হরগৌরী রূপে। ২৫০ বছরের প্রাচীন পুজো দেখতে আজও ভিড় জমান মানুষজন।
পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রাচীন গ্রাম বড়শুল। প্রায় তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এই গ্রামে বসবাস করছে দে পরিবার। বিশাল বাড়ি সাক্ষী রয়েছে বহু দুর্গা পুজোর। রয়েছে গৃহদেবতার ঠাকুরদালান। বাড়িটির স্থাপত্যরীতিতে ছোঁয়া রয়েছে গ্রিক ও ব্রিটিশ প্রভাব। কথিত আছে, প্রায় ২৫০ বছর আগে এই জমিদার পরিবারের একজন সদস্য গৌড়প্রসাদ দে প্রথম স্বপ্নে আদেশ পান মায়ের পুজো করার জন্য। এরপর থেকে তিনি শুরু করেন দুর্গাপুজো, যা আজও সমান নিষ্ঠার সঙ্গে আয়োজিত হয়ে চলেছে। প্রাচীন সেই জমিদার বাড়ির দুর্গাদালানটি আজও বহন করে চলেছে দুর্গাপুজোর স্মৃতি।
কিন্তু এই প্রাচীন জমিদার বাড়িতে কেমনভাবে পূজিত হন মা দুর্গা? দে পরিবারের এক সদস্য জানালেন, এই বাড়িতে মা দুর্গা পূজিত হন হরগৌরী রূপে। একচালার ডাকের সাজের প্রতিমা। বাঘছাল পরিহিত শিবের বাম ঊরুতে বসে থাকেন দুই হাত বিশিষ্ট দেবী দুর্গা। আর শিবের ডানদিকে থাকেন লক্ষ্মী ও গণেশ আর বাঁদিকে থাকেন সরস্বতী ও কার্তিক। প্রতিমা দেখলে চোখের সামনে ভেসে উঠবে গ্রাম বাংলার চিরায়ত দৃশ্য। এক ঝলকে মনে হবে যেন বাংলার কোনও পরিবারের কন্যা শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে এসেছে সন্তান-সন্ততি ও স্বামীকে নিয়ে। দে বাড়ির এই পুজোর কাঠামো পুজো হয় রথের দিন। ওইদিন কাঠামো পুজো করে শুরু হয় মূর্তি গড়া। শারদষষ্ঠীতে হয় মায়ের বোধন। কোনও অন্নভোগ দেওয়া হয় না মাকে। বদলে মাকে নিবেদন করা হয় লুচি, তরকারি, বোঁদে, মিহিদানা থেকে শুরু করে নানারকমের ফল। পাঁঠাবলি দেওয়া হয় এই বাড়ির পুজোতে। অষ্টমীর দিন হয় ধুনো পোড়ানো। দশমীর দিন সকালে পুজোমণ্ডপে পরিবারের সবাই শুচি বস্ত্র পরে বেলপাতায় দুর্গানাম লিখে মায়ের পদতলে রাখে। দশমীর সন্ধ্যায় সিঁদুরখেলার পর হরগৌরী মূর্তিকে ঘোরানো হয় সারা গ্রাম। এরপর প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়।