নিজস্ব প্রতিনিধি: বর্তমানে প্রথম সারির সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্য়ে অন্যতম বারুইপুর সাব ডিভিশন হাসপাতাল। গত একমাসে সবচেয়ে বেশি সেরিব্রাল স্ট্রোক রোগীদের প্রাণ বাঁচিয়েছে এই হাসপাতাল। এই সাফল্যকে কুর্নিশও জানিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
স্ট্রোক বর্তমানে খুব গুরুত্বর সমস্য়া। দ্রুত চিকিৎসা না হলে প্রাণ পর্যন্ত যেতে পারে এই সমস্য়ায়। আর গত একমাসে সবচেয়ে বেশি সেরিব্রাল স্ট্রোক রোগীদের প্রাণ বাঁচিয়েছে এই হাসপাতাল। বাঙুর ইনস্টিটিউটকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে এই হাসপাতাল।
স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে ১২ জন স্ট্রোক রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়েছেন এই হাসপাতাল। একজনও স্ট্রোক পরবর্তী প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়নি। দ্বিতীয় স্থানে বিদ্যাসাগর হাসপাতাল এবং তৃতীয় স্থানে ক্যানিং সাব ডিভিশন হাসপাতাল। এই দুটি হাসপাতালে গত একমাসে যথাক্রমে ১১ ও ৯ জন স্ট্রোক রোগীকে সুস্থ করেছে। সেরিব্রাল স্ট্রোক রোগীদের দ্রুত সুস্থ করতে রাজ্যের একমাত্র ভরসা ছিল বাঙুর হাসপাতাল। তবে এখন চাপ কমছে বাঙুরের। বারুইপুর সাব ডিভিশন হাসপাতালের সুপার ডা. ধীরেশ রায়ের কথায়, ‘‘এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে রোগীর পরিবারের সচেতনতা এবং হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিষ্ঠা।’’
নিয়ম অনুযায়ী সেরিব্রাল স্ট্রোক হওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে রোগীর সিটি স্ক্যান করে দেখতে হয় রক্ত জমাট বেঁধেছে আছে কিনা। একমাসে যে বারোজন রোগীকে সুস্থ করা হয়েছে তাঁদের ‘গোল্ডেন আওয়ার’ অর্থাৎ ওই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, এবং সিটি স্ক্যান করে চিকিৎসা হয়। হাসপাতালের আরেক চিকিৎসকের কথায়, মাত্র দুজন রোগীকে বিআইএনে পাঠানো হয়েছিল সিটি স্ক্যান করার জন্য। ওই দুজনকে গ্রিন স্লিপ দিয়ে গ্রিন করিডর করে পাঠানো হয়। তাঁদেরও গোল্ডেন আওয়ারের মধ্যে সিটি স্ক্যান করে চিকিৎসা শুরু হয়। ফলত, এই কারণেই বারুইপুর সাব ডিভিশন হাসপাতালের এই সাফল্য। একইরকমভাবে বিদ্যাসাগর ও ক্যানিং হাসপাতালেও সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধা রোগীকে ইঞ্জেকশন দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। ধীরেশবাবুর কথায়, ‘‘শুধুমাত্র একমাসের জন্য নয়, আমরা চাই বছরভর এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। হাসপাতালে অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সর্বোপরি প্রয়োজনে বিআইএনের রাতদিন টেলিমেডিসিন সাপোর্ট। তাই রোগীকে গোল্ডেন আওয়ারের মধ্যে চিকিৎসার জন্য আনা হলে সুস্থ হবেই।’’