নিজস্ব প্রতিনিধি: সকাল সন্ধ্যা কার্যালয়ের এসি ঘরে বসে গরম গরম বাতেলা। মাঝে মধ্যে মাঠে নেমে এক আধটা সভা। আর থেকেই থেকেই হাইকোর্টে দৌড়। এটাই এখন বঙ্গ বিজেপির রুটিন জীবন। তারপর তো রয়েইছে হাজারো গোষ্ঠীর হাজারো দ্বন্দ্ব। এ ওর মুখ দেখে না, সে তার সঙ্গে কথা বলে না, ও গেলে আমি আসব না, আমাকে না দিয়ে কেন ওকে দেওয়া হল – এসব তো রয়েইছে। যার নিট রেজাল্ট, নীচতলায় কার্যত বিলুপ্তপ্রায় দলে পরিণত হয়েছে বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP)। দেশজুড়ে যখন গেরুয়া শিবির বিজেপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করছে তখন বঙ্গে দেওয়াল লেখার কর্মীও(Workers) পাচ্ছে না পদ্মশিবির।
আরও পড়ুন স্কুলস্তরেই শিক্ষার গেরুয়াকরণে জোর, কোপ গান্ধীহত্যার ইতিহাসে
এদিন দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। রাজ্যজুড়েই তা পালন করছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। সকাল সকাল কার্যালয়ের সামনে হাজির হয়ে দলের পতাকা তোলা, বিরোধীদের গালমন্দ করা, লাড্ডু বিতরণ করা, ভাঁওতাবাজির বানী বিতরণ সবই চলছে। খালি হচ্ছে না দেওয়াল লেখার কাজ। কেননা সে কাজ করার মতো কর্মীই নেই দলে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গ বিজেপিকে নির্দেশ দিয়েছে, এদিন থেকে আগামী ১৪ এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যের ৭২ হাজার বুথে(Booth) কমপক্ষে একটি করে দেওয়াল লিখতে হবে দলের প্রচারের জন্য। কী লেখা হবে সেই দেওয়ালে? ‘আরেকবার ফের মোদি সরকার, আরেকবার ফের বিজেপি’, প্রতি বুথের একটি দেওয়ালে লিখতে হবে এই শ্লোগান। কিন্তু লিখবে কে? রাজ্যের কয়েক হাজার বুথে একজনও কর্মী নেই। বাংলায় যে সংখ্যক বুথ রয়েছে তার ৩০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২১ হাজার বুথে কোনও কর্মী নেই। বাকি বুথে কর্মী থাকলেও সবক্ষেত্রে কর্মীর অভাবে বুথ কমিটি গঠন হয়নি। সংখ্যালঘু এলাকায়(Minority Area) একটি বুথেও একজনও কর্মী নেই।
আর ও পড়ুন ঝাঁঝ কমছে DA আন্দোলনের, গুরুত্ব পাচ্ছে না কর্মবিরতি
অথচ এই বঙ্গ বিজেপিকেই দলের জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা(J P Nadda) দায়িত্ব দিয়েছেন, ‘২৪-এ ২৫+’। মানে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ২৫টি আসন চাই তাঁদের। আর এই গাঁজাখুরি দাবি দেখে এখন বঙ্গ বিজেপির নেতারাই হাসবেন না কাঁদবেন তা নিজেরাই ভেবে পাচ্ছেন না। ২৪’র লড়াইয়ে বিজেপি ৫টি আসনেও জয়ের মুখ দেখবে কিনা তা নিয়ে যখন বড়সড় প্রশ্ন ঘুরছে সেখানে ২৫টি আসন দখল করার স্বপ্ন যে অচিরেই দুঃস্বপ্নে রূপান্তরিত হতে চলেছে তা বেশ বুঝতে পারছেন বঙ্গ বিজেপির নীচুতলার নেতা থেকে কর্মীরা। কেননা দলের নির্দেশ মেনে যেখানেই তাঁরা দেওয়াল লিখতে যাচ্ছেন সেখানেই ঘাড় ধাক্কা, গলা ধাক্কা খাচ্ছেন। কোথাও কোথাও তো রীতিমত ঝাঁটা হাতে তাড়া খেতে হচ্ছে বলেও দাবি দলের নীচুতলার কর্মীদের। দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে দল যখন কেন্দ্রের ক্ষমতায়, তখন বাংলার বুকে এহেন দিনও দেখতে হচ্ছে পদ্মপার্টির নেতাদের।