নিজস্ব প্রতিনিধি: কড়া পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI’র। গরু পাচার কাণ্ডের(Cattle Smuggling Case) তদন্তে নেমে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আগেই গ্রেফতার করেছে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে(Anubrata Mondol)। তাঁর সম্পত্তি নিয়েও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই সূত্রেই CBI’র নজরে পড়েছেন অনুব্রত কম্ন্যা এবং তাঁর কিছু ঘনিষ্টজনেরা। তাঁদের মধ্যে আছেন কেষ্ট’র বাড়ির রান্নার লোক বিজয় রজকও(Bijay Rajak)। সেই বিজয়ের Bank Account-ই এবার ফ্রিজড করার নির্দেশ দিল CBI। জেলার সদর শহর সিউড়িতে থাকা বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে বিজয়ের যে অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেই অ্যাকাউন্টের যাবতীয় লেনদেন ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছে CBI। বিজয়ের ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হিসেববহির্ভূত ১৫ লক্ষ টাকার হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। একইসঙ্গে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের দীর্ঘ দিনের গাড়িচালক তুফান মিঞার(Tufan Miya) নামেও প্রায় দু’কোটি টাকা মূল্যের জমির সন্ধান পেয়েছেন CBI আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে দেশের ভূগর্ভস্থ জল, কলকাতায় জলাভূমিতে অক্সিজেনের ঘাটতি
বীরভূমে সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে সিবিআই ৩ দফায় মোট ৪৪৫টি সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পায়। এই সব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গরু পাচারের টাকার লেনদেন হতো বলে অভিযোগ। শেষে সিউড়ি শাখার ওই সমবায় ব্যাঙ্কের খোঁজ পাওয়া ১১৫টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি বিজয় রজকের বলে নিশ্চিত হয়েছে CBI। বিজয়ের সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে CBI আধিকারিকেরা জানতে পারেন, যে সে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পরিচারকের কাজ করে, মূলত রান্নাবান্না। লাভপুর কলেজে অস্থায়ী কর্মীদের তালিকাতেও তাঁর নাম রয়েছে। অতীতে একাধিকবার CBI আধিকারিকরা বোলপুরের রতনপল্লির অস্থায়ী ক্যাম্পে তাকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালান। জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে CBI সূত্রে জানা গিয়েছে। এরই পাশাপাশি আসানসোল CBI আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পেশ করা সর্বশেষ রিপোর্টে জানা গিয়েছে, সুকন্যা মণ্ডলের গাড়িচালক তুফান মিঞার নামে বোলপুরের কাছে কঙ্কালীতলায় ৫২ কাঠা জমি কেনা রয়েছে। বোলপুরের কালিকাপুরে দীর্ঘদিন ধরে থাকেন তুফান। অনুব্রত এবং সেহগলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা জেনেছেন CBI আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন দাম্পত্য জীবন সুখকর ও স্বাস্থ্যকর বানাতে উদ্যোগী রাজ্য, হাতিয়ার রূপশ্রী
কিছুদিন আগেই সিবিআই তুফানকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর পরেই তাঁর নামে কেনা ওই জমির খোঁজ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জমি সংক্রান্ত সেই তথ্য আসানসোল CBI আদালতে জমা দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী অফিসার। সূত্রের খবর, CBI আধিকারিকেরা এখন মূলত জানতে চাইছেন, বিপুল অঙ্কের এই জমি কেনার টাকা একজন গাড়িচালক কোথা থেকে পেলেন? কে তাকে সেই টাকা দিল? এই ভাবেই কী অন্যদের নামে জমি কিনে রেখেছেন প্রভাবশালীরা? সূত্রের খবর, সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে এমন বহু অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে CBI মনে করছে যেখান থেকে গরু পাচারের টাকার লেনদেন হয়েছে। সাধারণ স্তরের কিছু দোকান মালিক ও দিনমজুরের নামেও ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে বলে জেনেছে CBI। সেই টাকা দিয়ে জমি কেনা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।