নিজস্ব প্রতিনিধি: পিতা মাতা হারা চার নাতনিকে নিয়ে দু’মুঠো খাবারের সংস্থান করতে সমস্যায় অসহায় বৃদ্ধ দাদু। নিজেদের পাশাপাশি নাতি-নাতনি মুখে অন্ন তুলে দেবেন কীভাবে সেই চিন্তায় বৃদ্ধ দম্পতি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি ব্লকের বিনসিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তিওর নওপাড় পাড়া এলাকার ঘটনা। জানা গিয়েছে তিওর নওপাড়া এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ দম্পতি মুন্সি হেমরম ও ভুলি হাঁসদার কন্যা মিনতি হেমব্রম এর সঙ্গে বিয়ে হয় মাহিনগর এলাকার বাসিন্দা সুকুল সরেনের। বছর চারেক আগে সুকুল সরেন টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপরে মিনতি হেমব্রম একাই তার চার সন্তানকে মানুষ করেছিলেন। ১ বছর আগে বিদ্যুতের শক খেয়ে মৃত্যু ঘটে মিনতি হেমব্রমেরও। তারপরে বৃদ্ধ মুন্সি হেমব্রম তার অসহায় অনাথ নাতনিদের বাঁচাতে তার কাছে নিয়ে এসেই রাখেন। যদিও বৃদ্ধ মুন্সি হেমব্রম বয়সের ভারে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন বললেই চলে।
আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মুন্সি হেমব্রমের একমাত্র আয় ছিল রাজ্য সরকারের দেওয়া বার্ধক্য ভাতা। এবার সংসার চালাতে না পারে মুন্সির পাশে দাঁড়ালো দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আইএনটিটিইউসি সভাপতি রাকেশ শীল। এই মুহূর্তে প্রকাশিত খবর দেখেই বৃদ্ধ মুন্সি হেমব্রমের বাড়ি গিয়ে সাহায্য করেছেন তৃণমূল নেতা। সেখানে গিয়ে মুন্সির হাতে বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্যাদি ও নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে এই বৃদ্ধের পরিবারকে টাকা না দিয়ে কিছু আনাজ বাজার করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। বৃদ্ধ মুন্সি হেমব্রমের পরিবারকে বাঁচাতে রাকেশ শীলের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে সাধারণ মানুষ।
গত করোনার সংকটের সময় থেকেই মুন্সি হেমব্রম, তার স্ত্রী ভুলিদেবী ও তাদের চার নাতনি সুনিতা, কনিকা, দীপালি, শেফালিরা প্রায় অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অসহায় এই কন্যারা আর্থিক অনটনের কারণে স্কুলের গন্ডি দেখেনি বললেই চলে। মাঠ থেকে শাকপাতা এবং পুকুর থেকে গুগলি তুলে এনে কোনওমতে নিজেদের আহার জোগাড় করছে এই অসহায় পরিবারটি।