নিজস্ব প্রতিনিধি: ১জন ১০ বছরের সাংসদ, অপরজন ৫ বছরের। কিন্তু দেখা গেল ১০ বছরের সাংসদের কাছেই হেরে ভূত হয়ে বসে রয়েছেন ৫ বছরের সাংসদ। কার্যত পরীক্ষায় ডাহা ফেলই করেছেন শেষেরজন। প্রথমজন অবশ্য সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন। দুইজনই আবার মেদিনীপুরের। প্রথমজন যদি হন দীপক অধিকারী, তো দ্বিতীয় জন দিলীপ ঘোষ। তথ্য আর পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার দুই সাংসদ তাঁদের সাংসদ কোটার অর্থ খরচে দুই ভিন্ন রেজাল্ট করেছেন। কার্যত ডাহা ফেল করেছেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ(BJP MP) দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)। কেননা তাঁর সাংসদ তহবিলের(MP Fund) ৭ কোটি টাকার মধ্যে এখনও ২ কোটি টাকা খরচই হয়নি। তাই বাকি ১০ কোটি টাকার দাবিও করা যায়নি। কিন্তু ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ(TMC MP) দীপক অধিকারী থুড়ি বাংলার হিরো দেব(Dev) তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রের জন্য ৭ কোটি টাকার খরচ তো দেখিয়ে বাকি ১০ কোটি টাকাও কেন্দ্রের থেকে অনুমোদন করিয়ে এনেছেন।
২০১৯ সালে ১৭জুন থেকে ১৭তম লোকসভা শুরু হয়েছে। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ১৬ জুন। এই সময়সীমার মধ্যেই দেশের ওপর দিয়ে কোভিড ঝড় বয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০১৯-’২০ সালে প্রথম কিস্তিতে প্রত্যেক সাংসদ এলাকার উন্নয়নের জন্য আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই পরিমাণ টাকা দেবের ঘাটাল আর দিলীপের মেদিনীপুরের জন্যও বরাদ্দ হয়েছিল। ২০১৯-’২০’তে দ্বিতীয় কিস্তি এবং ২০২০-’২১-এর আরও দু’টি কিস্তির টাকা দেয়নি কেন্দ্র দেশজুড়ে কোভিডের প্রকোপ ও লকডাউনের কারণে। এরপর ২০২১-’২২ আর্থিক বছরে দু’কোটি এবং ২০২২-’২৩ আরও আড়াই কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত দেশের সব লোকসভা কেন্দ্রের জন্য ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে মোদি সরকার। নিয়ম মেনে এই টাকার UC বা Utilization Certificate দাখিল করলে তবেই ২০২২-’২৩ এবং ২০২৩-’২৪আর্থিক বছরের প্রাপ্য হিসাবে আরও ১০ কোটি টাকা চাওয়া যাবে।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, দিলীপ ঘোষের লোকসভা কেন্দ্রের জন্য আসা ৭ কোটি টাকার মধ্যে ২ কোটি টাকার Utilization Certificate দাখিলই হয়নি। অর্থাৎ ওই ২ কোটি টাকা খরচই হয়নি। খরচ হয়েছে ৫ কোটি টাকার। কিন্তু দেবের লোকসভা কেন্দ্র ঘাটালের জন্য আসা ৭ কোটি টাকার পুরোটাই খরচ হয়েছে এবং তার Utilization Certificate জমাও পড়েছে। আর তাই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে ওই লোকসভা কেন্দ্রের জন্য মোদি সরকারের কাছে আরও ১০ কোটি টাকা দুটি অর্থবর্ষের জন্য দাবি করা হয়েছিল যা অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে, সেই পরিমাণ টাকার বরাদ্দও করে দেওয়া হয়েছে।