নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার অন্যতম উৎসব কালীপুজো। বঙ্গে কালীপুজোর প্রচলন করেছিলেন যে মানুষটি তাঁর নাম কৃষ্ণানন্দ আগামবাগীশ। সেই কালীসাধকই নতুন ভাবে শিখিয়েছিলেন তন্ত্রসাধনা। তাঁর জন্ম নদীয়া জেলার নবদ্বীপে।
জনশ্রুতি, ‘নিরাকার’ ভাবে কালীপুজো করার পরে একদিন দেবীর (KALI) কাছে কৃষ্ণানন্দ প্রার্থনা জানিয়েছিলেন, ‘সাকার’ রূপে দেখা দেওয়ার। তাঁর ইচ্ছে হয়েছিল, মূর্তি তৈরি করে দেবীকে আরাধনা করার। রাতে তিনি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন দেবীর। বিধান ছিল, রাত ফুরোলেই কৃষ্ণানন্দ যে নারীকে দেখবেন, সেই নারীর রূপই দেবীর সাকার রূপ। পরের দিন তিনি দেখেছিলেন, গাছের গুঁড়িতে ঘুঁটে দিচ্ছেন এক ভদ্রমহিলা। তাঁর বাঁ হাতে গোবর। ডান হাতে করে ঘুঁটে দিচ্ছেন। বরণ কালো, চুল লম্বা। গা ছিল ‘আদুল’। কৃষ্ণানন্দ যেমন ওই মহিলাকে দেখতে পেয়েছিলেন, তেমনই ওই মহিলাও দেখতে পেয়েছিলেন তাঁকে। এরপরেই লজ্জায় জিভ কেটেছিলেন মহিলা। তারপরেই কৃষ্ণানন্দ ওই আদলে তৈরি করেছিলেন দেবীর সাকার রূপ। বাংলার ঘরে ঘরে সেই ‘দক্ষিণা কালী’কেই দেখা যায়। উল্লেখ্য, কৃষ্ণানন্দের আসল পদবী ভট্টাচার্য। তন্ত্রসাধনায় সিদ্ধিলাভ করার পরে তিনি ‘আগামবাগীশ’ উপাধি পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন রামপ্রসাদ সেনের তন্ত্রগুরু। নবদ্বীপে ‘আগমেশ্বরী’ মাতার পুজো জনপ্রিয়।
শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণব, গণপত্য এবং সৌর সম্প্রদায়ের তন্ত্র পদ্ধতিগুলির সার নিয়ে তিনি রচনা করেছিলেন বিখ্যাত ‘তন্ত্রসার’ গ্রন্থ। তাই নদিয়া শুধু কৃষ্ণপীঠ নয়, কালীপীঠও। নদিয়া মানেই তো কৃষ্ণ, কালী আর মিলেমিশে ‘কৃষ্ণকালী’।
আরও পড়ুন: যিনি কৃষ্ণ তিনিই কালী, কৃষ্ণকালীর কথা…