নিজস্ব প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের শীর্ষ আধিকারিক ও মন্ত্রীদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠক থেকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ব্যাঙ্কগুলিকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেননা রাজ্যের প্রশাসনিক স্তর থেকে বার বার বার্তা দেওয়া হলেও নবান্নে রিপোর্ট আসছে ব্যাঙ্কগুলি পড়ুয়াদের ঋণ দিচ্ছে না। এমনকি সেই তালিকায় রাজ্যের কিছু সমবায় ব্যাঙ্কও রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে এদিনের বৈঠক থেকে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি ওই সব সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকেও কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষ ১৪ হাজার পড়ুয়া স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন জানিয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ হাজার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। আরও ২৫ হাজার আবেদন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর কাছে রিপোর্ট আসছে ব্যাঙ্কগুলি এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। বার বার বলা হচ্ছে এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারই গ্যারেন্টার। তারপরও সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি এই প্রকল্পে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদনকারীদের ঋণ দিচ্ছে না। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়কে বলেন, ‘যে সব ব্যাঙ্ক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করতে চাইছে না, তাদের বাদ দিয়ে সমবায় ব্যাঙ্ককে দায়িত্ব দিন। সরকার গ্যারান্টি দিচ্ছে, টাকা দিতেই হবে। যে সমবায় ব্যাঙ্ক ঋণ দিচ্ছে না, তাদের ডেকে কথা বলুন। এই ঋণ দিয়ে ওরা আমাদের বা কাউকে দয়া করছে না, এটা ব্যাঙ্কগুলোকে বুঝতে হবে।’
উল্লেখ্য রাজ্য সরকার রাজ্যের মেধাবী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যাতে কোনও আর্থিক বাধা না আসে সেটা দেখার জন্যই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পড়ুয়ারা ঋণ পাবে ব্যাঙ্কগুলি থেকে। কিন্তু বার বার অভিযোগ উঠছে এই প্রকল্পে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দিতে চাইছে না। এমনকি রাজ্য সরকার নিজে এই প্রকল্পের জন্য গ্যারেন্টার হিসাবে থাকলেও এই ঋণের জন্য যে সব পড়ুয়া আবেদন করছে বহুক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ওই সব ব্যাঙ্ক পড়ুয়াদের কাছ থেকে বাড়ির দলিল, ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজ, দোকানের দলিল, জমির দলিল চেয়ে পাঠাচ্ছে গ্যারান্টি হিসাবে। সেই সব জমা দিলে তবেই ঋণ মঞ্জুর হবে বলে বলা হচ্ছে। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী গতবছরই এক প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জানিয়ে দেন, যেহেতু রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্য মুখ্য গ্যারেন্টার তাই ব্যাঙ্কগুলি যেন পড়ুয়াদের কাছ থেকে এইরকম গ্যারেন্টি গত কাগজপত্র না চায়। কিন্তু সেই নির্দেশের পরেও যে পরিস্থিতির খুব একটা বদল হয়নি সেটা এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই পরিষ্কার হয়ে গেল।