নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় বলে পুলিশে ছুঁলে আঠারো ঘা। কিন্তু আইনে ছুঁলে? হয়তো তার অনেক বেশি। সেটাই এখন দেখা যাচ্ছে হাঁসখালি(Hanskhali) কাণ্ডে। নাবালিকাকে গণধর্ষণ ও পরে তার মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি শোরগোল আগেই পড়ে গিয়েছে। এবার সেই ঘটনাতেই সামনে এল বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে ঘটনার জেরে পুলিশের(Police) করা এফআইআরে(FIR) নাম রয়েছে নির্যাতিতার বাবার ও জ্যাঠতুতো দাদার। আর সেই নাম ঢোকানো হয়েছে নির্যাতিতার মায়ের বয়ানের ভিত্তিতে। সেই সঙ্গে সেই এফআইআরে নাম রয়েছে দুই প্রতিবেশীরও। এদের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় দেহ লোপাটের অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। আর এই ঘটনা সামনে এসেছে নির্যাতিতার মা সিবিআই(CBI) আধিকারিকদের কাছ থেকে এই বিষয়ে জানতে পারার পর। সব থেকে বড় কথা পুলিশ কিন্তু মোটেও অস্বীকার করছে না এই ঘটনার কথা।
হাঁসখালি কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে নির্যাতিতার বাবা-মাকে কৃষ্ণনগরে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর আধিকারিকেরা। সোমবার তাঁদের ডেকে পাঠিয়ে বয়ান রেকর্ড করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। আর সেই বয়ান রেকর্ডের সময়েই সিবিআই আধিকারিকেরা নির্যাতিতার মাকে জানান, পুলিশ গণধর্ষণ কাণ্ডে যে এফআইআর দায়ের করেছে সেখানে নাম রয়েছে তাঁর স্বামী ও ভাসুরপোর। সঙ্গে নাম রয়েছে দুই প্রতিবেশীরও। সেই কথা শুনে রীতিমত চমকে যান নির্যাতিতার মা। যদিও তিনি সিবিআই আধিকারিকদের পালটা জানান, পুলিশের কাছে তিনি এমন কোনও বক্তব্য বা অভিযোগ জানাননি। যদিও সিবিআইয়ের এক কর্তা নির্যাতিতার মাকে জানান, তাঁর বয়ানের ভিত্তিতেই এফআইআরে নাম রেখেছে পুলিশ।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে কখনওই আমাকে জানানো হয়নি যে আমার স্বামী, ভাসুরপো আর দুই প্রতিবেশীর নাম রয়েছে এফআইআরে। আমি এদের নিয়ে পুলিশকে কিছু জানাইওনি। পুলিশ কেন এদের নাম ঢোকালো তা জানি না।’ যদিও নদিয়া(Nadia) জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নির্যাতিতার মা সরাসরি এদের নাম করে কোনও অভিযোগ করেননি। কিন্তু তাঁর বয়ানে এই চারজনের নাম উঠে এসেছে। ঘটনার জেরে এরা পকসো আইনে জড়িয়ে পড়েছেন। কেননা নির্যাতিতার মা পুলিশের কাছে যে বয়ান দেন সেখানে তিনি জানান, মেয়ের দেহ পোড়ানোর সময় ঘটনাস্থলে স্বামী ছিলেন। ছিলেন তাঁর ভাসুরপো এবং দুই প্রতিবেশী। যে হেতু নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু এবং ধর্ষণের মতো অভিযোগ রয়েছে, তাই এটি পকসো আইনের আওতায় আসে। সেই আইন অনুযায়ী, এমন দেহ পোড়ানোর অর্থ, দেহ লোপাট করার চেষ্টা। কাজেই ওই আইন অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে থাকা সকলের নাম এফআইআরে রাখা হয়েছে। নির্যাতিতার মায়ের বয়ানের রেকর্ডও পুলিশের কাছে আছে। তাই চট করে ওই চার নাম বাদ দেওয়া যাবে না। বরঞ্চ ওই ৪জন যে কোনও সময় গ্রেফতার হতে পারেন পুলিশের হাতে।