নিজস্ব প্রতিনিধি: রূপা গাঙ্গুলির(Roopa Ganguly) রাজ্যসভার সদস্যপদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের অক্টোবর মাসে। কিন্তু তিনি কী তার আগেই ইস্তফা দিয়ে দিচ্ছেন? নাকি তিনি বিজেপি(BJP) ছেড়ে দিচ্ছেন? এই সব প্রশ্নই এখন রাজ্য রাজনীতিতে ঘোরাফেরা করতে শুরু করে দিয়েছে। নেপথ্যে রূপার ফেসবুক পোস্ট(Facebook Post)। শুক্রবার রাতের দিকে রূপা তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘অনেকের অনেক কাজ শেষ করে উঠতে পারলাম না! একা একা লড়ে গিয়েছি। চেষ্টায় ফাঁকি রাখিনি। জীবনকে নতুন করে চেনালো রাজনীতি।’ আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে রূপা কী তাহলে খুব শীঘ্রই রাজ্যসভার(Rajyashabha) সাংসদের পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন? রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন? বিজেপি ছেড়ে দিচ্ছেন? আর এই সব প্রশ্নের জেরে অস্বস্তির মুখে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বও। কেননা বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব কোনওদিনই সেভাবে রূপাকে মেনে নিতে পারেনি। দুই তরফেই দূরত্ব বজায় থেকেছে সজ্ঞানেই। বাংলায় রূপাকে বিজেপির কর্মসূচিতে খুব কমই দেখতে পাওয়া গিয়েছে। আর এবার তো রূপার পোস্ট দেখে অনেকেই মনে করছেন তাঁর রাজনীতির কেরিয়ারে সম্ভবত ইতি পড়ে যেতে চলেছে।
বি আর চোপড়ার ‘মহাভারত’ থেকে রূপার উত্থান অভিনয়ের জগতে। বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পকেও নিজের অভিনয়ে একাধিক সিনেমার মাধ্যমে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন তিনি। একসময় রূপাকে বাম সমর্থক হিসাবেও দেখা গিয়েছে। পরিবর্তনের পরেও রূপা ক্রমশ বিজেপি ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। ২০১৫ সালে তিনি তিনি বিজেপিতে যোগও দেন। পদ্ম শিবিরের তরফে তাঁকে বাংলায় দলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রীও করা হয়। কার্যত সেই সময় থেকেই রূপা রাজ্য রাজনীতিতে নজর কাড়তে শুরু করেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি তাঁকে প্রার্থীও করে। সেই নির্বাচনে তিনি জয়ী না হলেও তাঁর ভূমিকায় খুশি পদ্মশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে রাষ্ট্রপতি মনোনিত রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার সুযোগও করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকেই রাজ্যসভার মনোনিত সদস্য রূপা। সেই হিসাবে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর কার্যকালের মেয়াদ রয়েছে। অর্থাৎ হাতে তাঁর এখনও ৬ মাস সময় রয়েছে। কিন্তু তার আগেই তিনি পোস্ট করলেন,‘অনেকের অনেক কাজ শেষ করে উঠতে পারলাম না!’ আর তাতেই উঠছে প্রশ্ন। তিনি কী তাঁর কার্যকাল মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইস্তফা দিয়ে দিতে চান? বিজেপি ছাড়তে চান? রাজনীতিকেও কী বিদায় জানাতে চান? কেন ‘একা একা লড়ে গিয়েছি’ কথাটি তুলে ধরলেন? তাহলে কী বিজেপির থেকে তাঁকে কেউ কোনও সমর্থন জানায়নি?
এই সব প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকেও। রূপা বিজেপি ছাড়লে নিঃসন্দেহে তা পদ্মশিবিরের কাছে বড় ধাক্কা হতে চলেছে। কিন্তু কেন তিনি বিজেপির কাছ থেকে কোনওরকম সহযোগিতা পাননি তা নিয়ে প্রশ্ন এখন ছিঁড়ে খাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে। যদিও অনেকে মনে করছেন চলতি মাসে অমিত শাহ বাংলায় এলে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন। আর সেই বৈঠকে রূপাকে নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সেখানেই তাঁর রাজ্যসভার সদস্যপদ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন শাহ। প্রয়োজনে তাঁকে দলের কোনও পদ বা দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে। কেননা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চান না রূপা দল ছাড়ুক। রীপার ক্ষোভ বিক্ষোব কিছু থাকলে তা নিয়ে কথা বলার জন্য লকেট চট্টোপাধ্যায়কেও এগিয়ে দিতে পারে পদ্মশিবির। অন্তত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সূত্রে তেমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে।