নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৫৭ ভোটে পরাস্ত হলেও সাম্প্রতিক কালে হয়ে যাওয়া উপনির্বাচনে কোচবিহার জেলার দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দেড় লক্ষেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা বিধায়ক উদয়ন গুহ। এবার তাঁকেই ফোন করে হিন্দিতে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হল। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার কিছু পরেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে নম্বর থেকে ফোন গিয়েছিল তা ব্যক্তিগত বিশেষ নম্বর যা সাধারনত প্রাইভেট নম্বর হিসাবেই চিহ্নিত হয়। তাই যে বা যারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন তাঁরা খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে।
উদয়নবাবু জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা বেজে ১০ মিনিট নাগাদ তাঁকে ফোন করে এক ব্যক্তি ইংরাজিতে তাঁকে ধমকাতে শুরু করেন। তাঁকে বলা হয় কেন তিনি বিএসএফ-কে নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রেখেছেন। এরপরেই হিন্দিতে তাঁকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করা হয়। সেই সময় উদয়নবাবু প্রতিবাদ করলেও ওই ব্যক্তি তা ধার্তব্যের মধ্যে আনতে চাননি। তাঁকে রীতিমত দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনা প্রসঙ্গে উদয়ন গুহ জানিয়েছেন, ‘প্রাইভেট নম্বর তো সকলে পান না। আমার ধারণা এর নেপথ্যে কোনও উচ্চপদস্থ কেউই রয়েছেন। কোনও হিন্দিভাষী বিধায়ক অথবা সাংসদ ও হতে পারেন।’ শুক্রবার সকালেই এই বিষয়ে সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার কথাও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়েছে বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধি বিরোধী প্রস্তাব। সেই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় উদয়ন গুহ বলেন, ‘বিএসএফের অত্যাচার যারা চোখে দেখেনি তারা বিশ্বাস করতে পারবে না। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন। তল্লাশির নামে ৮-১০ বছরের ছেলের সামনে যখন বাবাকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়, মায়ের গোপন জায়াগায় হাত দেওয়া হয়, তখন ওই ছেলে দেশপ্রেমিক হতে পারে না। ওর কানের কাছে যতই ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলা হোক, সে কিন্তু দেশপ্রেমিক হবে না। ভারতীয় সীমান্তের ১৫০ গজ ভিতরে কাঁটা তারের বেড়া। ভারত তার নিজের জায়গা ছেড়ে কাঁটা তারের বেড়া দিচ্ছে। যত জুলুম ভারতীয়দের ওপর। বিএসএফের কী জুলুম আমরা জানি। আমরা যারা সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করি, আমরা জানি। আমাদের পর্যন্তও ছাড়ে না ওরা। গাড়ি আটকে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে। সাধারণ মানুষও ওপরেও ওদের অত্যাচার বাড়বে।’