এই মুহূর্তে




বনেদিয়ানা আর আভিজাত্যে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে বরণ করে নেন শ্রীমানিরা

Courtesy - Google

নিজস্ব প্রতিনিধি: মধ্য কলকাতার(Kolkata) মানিকতলা(Maniktala) এলাকার সুকিয়া স্ট্রিট(Sukia Street)। সেখানেই ১৯১১ সালে নতুন বাড়ি তৈরি করেন মহেন্দ্র শ্রীমানী। সেই বাড়িতেই তিনি চালু করেন দুর্গাপুজো। এখনও ১০০ বছর পার করে সেই পুজো যথাসম্ভব বনেদিয়ানা আর আভিজাত্যে পূর্ণ হয়ে আয়োজিত হয়ে চলেছে প্রতি বছর। আগের সব রীতি এখনও বজায় না থাকলেও পুজোর(Durga Puja) ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। যদিও শ্রীমানিদের পারিবারিক পুজোর ইতিহাস প্রায় আড়াইশো বছরের। কেননা মহেন্দ্র শ্রীমানির পিতৃ পুরুষের ভিটে ছিল কলকাতারও রামচন্দ্র বোস লেনে। সেখানে বহু আগে থেকেই দুর্গাপুজো হত। পরবর্তীকালে ব্যবসায় প্রতিপত্তি বাড়তেই মহেন্দ্র চলে আসেন সুকিয়া স্ট্রিটে তাঁর নিজের তৈরি করা বাড়িতে। তাই মূল পুজোর বয়স প্রায় আড়াইশোর কাছাকাছি বলেই দাবি শ্রীমানি পরিবারের(Sreemani Family) সদস্যদের।

শ্রীমানিদের পুজো হয় বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে। রথের দিন কাঠামো নির্মাণ। কাঠামো পুজো থেকেই ঢাকে কাঠি পড়ে। প্রতিমা হয় ডাকের সাজে। মহালয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় বোধনের উপাচার। প্রতিপদে দেবীর ঘট স্থাপন করা হয়৷ ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বেলগাছের তলায় দেবীকে বোধন, আমন্ত্রণ সম্পন্ন করে মূল পুজোর জায়গায় হয় দেবীর বরণ ও অধিবাস। প্রতিপদ থেকে শ্রীমানি পরিবারের সদস্যরা আর আমিষ ছোঁন না। তবে শ্রীমানি পরিবারে মা অন্ন ভোগ পান না। শুকনো মিষ্টি, ৭-৮ রকমের নাড়ু মাকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি অষ্টমীর দিন আজও কুমারী পুজো হয় এখানে। বেলুড় মঠের রীতি অনুসরণ করেই কুমারী পুজো হয় শ্রীমানি বাড়িতে। আগে সন্ধিপুজোয় বন্দুক ফাটানোর রেওয়াজ ছিল। এখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শ্রীমানিরা মা দুর্গাকে তাঁদের বাড়ির মেয়ে হিসাবে বরণ করেন। তাই বিজয়া দশমীর দিন আজো মাকে মিষ্টি মুখ করিয়ে আগামী বছর আবার বাবার বাড়িতে আসার নিমন্ত্রণ জানানো হয় নিজের মেয়ে মনে করে।

কার্যত আধুনিক শহর কলকাতার বুকে আজও ঐতিহ্য আর বনেদিয়ানার মিশেলে উমার বন্দনায় মাতে সুকিয়া স্ট্রিটের শ্রীমানি পরিবার। যথাসম্ভব আভিজাত্যে আজও ঘরের মেয়ে দুর্গাকে বরণ করে নেন শ্রীমানিরা। আগে বিজয়া দশমীর দিন বিসর্জনের সময়ে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হতো। কিন্তু নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সে প্রথা বাদ গিয়েছে। বিশ্বাস ছিল, নীলকন্ঠ পাখি কৈলাসে গিয়ে শিবকে খবর দেবেন, বাপের বাড়ি থেকে উমা ছেলেমেয়ে নিয়ে রওয়ানা দিয়েছেন স্বামীগৃহের পথে। এখন আর সে রীতি নেই। আবার এক সময় শ্রীমানিদের প্রতিমা কাঁধে চাপিয়ে আত্মীয়দের বা়ড়ি নিয়ে যাওয়া হত। লোকের কাঁধে চেপে আজও প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য বের হয় ঠিকই, কিন্তু এখন আর প্রতিমাকে আত্মীয়দের বাড়িতে ঘোরানো হয় না। সময় এগিয়ে চলে, শ্রীমানি পরিবারে আবারও অপেক্ষা শুরু হয় আরও একটা পুজোর জন্য। মা আবারও আসবেন ছেলেমেয়ে নিয়ে বাপের বাড়িতে ৪ দিনের জন্য।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দার্জিলিংয়ে হিমালয়ান রেলে চড়িয়ে মা দুর্গাকে রংবুলের বাংলো নদীতে নিরঞ্জন

লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে উমাকে বিদায় সংখ্যালঘুদের, সম্প্রীতির ছবি মরা মহানন্দার ঘাটে

‘আসছে বছর আবার হবে’, বিষন্ন মন নিয়ে দশমীর রাতেও মণ্ডপে-মণ্ডপে হাজির দর্শনার্থীরা

দশমীতে হয় না বিসর্জন, উত্তরের চাষি পরিবারের কুটিরে ভান্ডানি রূপে বিশ্রাম নেবেন উমা

আবারও শুরু দিন গোনা! জেনে নিন আগামী বছরে দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট, কী কী বার থাকছে ছুটি?

প্রথা মেনেই ইছামতিতে বিসর্জন টাকি রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমার, নদীর পাড়ে ভিড় দুই বাংলার মানুষের

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ