এই মুহূর্তে




Mahalaya : মহালয়া  শুভ না অশুভ? বিচার করুন নিজেই




পৃথ্বীজিৎ চট্টোপাধ্যায়আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক-মঞ্জীর;

                                        ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা;

                                       প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা।

 মহালয়া বলতেই কানে বাজে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের অনির্বচনীয় কণ্ঠস্বর। প্রথাগত ভাবে রেডিওতে তাঁর কণ্ঠে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শুনেই ঘুম ভাঙে প্রত্যেক বাঙালির। মহালয়া চলে গেলেই শুক্লপক্ষের প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয়টি রাত্রিতে দেবী দুর্গার মোট নয়টি রূপের পূজা শুরু হয়ে যায়। তবে, মহালয়ার প্রসঙ্গে একটি দ্বন্দ্ব সবসময়ই মানুষের মনে হয়ে আসে। কার কারো মতে মহালয়াকে শুভ বলা যায় না, আবার কেউ বলে থাকেন মহালয়া সবসময়ই শুভ, তা কখনোই অশুভ হতে পারে না। আর, এ নিয়েও তর্কও নেহাত কম নয়।  তাহলে এর নেপথ্যে আসল কাহিনী কি ? কোনটিকেই বা আমরা সঠিক বলে মান্যতা দেবো ?

কথিত আছে, পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনালগ্নটিই হল মহালয়া। এই বিশেষ সন্ধিক্ষণ মানব জীবনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কথাতেই আছে ‘নানা মুনি নানা মত’, তাই নানা প্রাজ্ঞজনেরাও মহালয়া কথাটির নানা ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। যেহেতু মহালয়া থেকেই দেবী দূর্গার আবাহন মুহূর্তটি চিহ্নিত হয়ে যায়, তাই অনেকের মতে দেবী স্বয়ং হলেন এই আলয় বা আশ্রয়। ভিন্নমতে, এই মহান আলয় হল পিতৃলোক।

জনশ্রুতি আছে, পিতৃপক্ষের এক পক্ষকাল পিতৃপুরুষরা মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসে। সেসময় সেসকল আত্মারা জল ও তিল পাওয়ার আশায় বসে থাকেন। পৌরাণিক কাহিনী মতে, ব্রহ্মার নির্দেশেই গড়ে ওঠে এই মহামিলনক্ষেত্রটি। শাস্ত্রমতে, হিন্দুদের অবশ্য পালনীয় যে পঞ্চমহাযজ্ঞের বিধান রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল পিতৃযজ্ঞ অর্থাৎ তর্পণাদি। এই তর্পণ কথাটির অর্থ হল, আত্মার তৃপ্তির উদ্দেশ্যে জলদান। তবে তর্পণ তাই শুধু পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যেই হয় না, সর্বভূতের উদ্দেশেই করতে হয়।

মন্ত্রে বলা হয়েছে :    আব্রহ্মস্তম্বপর্যন্তং দেবর্ষিপিতৃমানবাঃ।

                              তৃপ্যন্ত পিতরঃ সর্বে মাতৃমাতামহোদয়ঃ।।

                              আব্রহ্মস্তম্বপর্যন্তং জগৎ তৃপ্যতু।

অর্থাৎ, দেবগণ, ঋষিগণ, পিতৃগণ, মাতৃগণ, নরগণ – ব্রহ্মা হইতে তৃণশিখা পর্যন্ত সমস্ত জগৎ আমা কর্তৃক প্রদত্ত অন্নজলে তৃপ্তিলাভ করুন। যেহেতু এইদিন পিতৃপুরুষের স্মরণ করা হয়, তাই সেক্ষেত্রে কারো কারো মতে এই দিনটি শোকের দিন। তাই দিনটিকে শুভ বলে চিহ্নিত করা সঙ্গত নয়।

অপরদিকে শাস্ত্রে বর্ণিত আছে, এই বিশেষ দিনেই মহিষাসুর বধের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন পরমা প্রকৃতি বিশ্বজননী দেবী দুর্গা। মহিষাসুরের কবল থেকে দেবগণকে উদ্ধার করার জন্য তিনিই হয়েছিলেন আশ্রয় অর্থাৎ, মহান আলয় বলতে মা দুর্গাকেই বোঝানো হয়। বলতে গেলে এই দিনেই দেবী দুর্গা সকল অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে উদ্যত হয়ে ওঠেন। আবার, শাস্ত্র মতে যে কোনো শুভ কাজে পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা বা তর্পন করা হয়। এই রীতি হিন্দুর নিত্য পঞ্চমহাযজ্ঞের অন্তর্গত। বলা ভালো, এই বিশেষ পবিত্র দিনে পূর্বপুরুষ ও উত্তরপুরুষদের মধ্যে এক মহামিলনক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়। তাই সেক্ষেত্রে মহালয়া কখনোই অশুভ হতে পারে না।  




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দশমীতে ইছামতীর তীরে জমজমাট এক দিনের বউ মেলা, তবে নিষিদ্ধ পুরুষ ক্রেতা

ফরিদপুরে একই মণ্ডপে ২৫১ দুর্গা প্রতিমা দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়

পুজো শেষে দুপুরে জমিয়ে খান ওল-চিংড়ি: সহজ রেসিপিতে রসনা তৃপ্তি করুন ঘরেই

মুম্বইতে দুর্গার বিদায় পর্বে জমিয়ে সিঁদুর খেললেন রানি-কাজলরা

৩০০ বছর ধরে সিংহবাহিনী দেবী রূপে পুজিতা হয়ে আসছেন এই রাজবাড়িতে

পান্তা ভাত-কচু শাক খেয়ে কৈলাসে পাড়ি দেন এই বনেদি বাড়ির উমা

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর