নিজস্ব প্রতিনিধি, কাবুল: তালিবান সরকারের অন্যায় আদেশের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবেই রুখে দাঁড়ালেন আফগান মহিলা টিভি সংবাদপাঠিকা ও উপস্থাপিকারা। শনিবার মুখে না ঢেকেই টিভি ক্যামেরার সামনে হাজির হয়ে অন্যান্য দিনের মতোই সংবাদ পাঠ এবং অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। আর আফগান মহিলা সংবাদ পাঠিকা ও উপস্থাপিকাদের এমন অসম সাহসকে কুর্নিশ জানিয়েছেন দেশের মানবাধিকার কর্মীরা। অনেকেই প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন বীরঙ্গনাদের।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ‘এএফপি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘গত বৃহস্পতিবারই আফগানিস্থানের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, শনিবার থেকে দেশের বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত মহিলা সংবাদপাঠিকা ও উপস্থাপিকদের মুখ ঢেকে ক্যামেরার সামনে বসতে হবে। যদিও ওই ফতোয়া নিয়ে গোটা দেশেই সমালোচনার ঝর উঠেছেন। উপস্থাপিকাদের মুখ ঢেকে লাইভ সম্প্রচারে আসার নির্দেশকে অনেকেই হাস্যকর আখ্যা দিয়েছিলেন। তালিবানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মহিলা সংবাদপাঠিকা কিংবা উপস্থাপিকারা টিভির পর্দার সামনে আসেন কিনা তার দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে ছিলেন অনেকে। কিন্তু শনিবার যা দেখা গেল তা অকল্পনীয়। টোলো নিউজ, শামসাদ টিভি এবং ওয়ান টিভির মহিলা উপস্থাপিকারা মুখ না ঢেকেই ক্যামেরার সামনে হাজির হয়েছিলেন।’
কুখ্যাত তালিবানিদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করার মতো দুঃসাহস কোথায় পেলেন মহিলা পাঠিকারা, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। শামসাদ টিভির সংবাদ বিভাগের প্রধান আবিদ এহসাস এ বিষয়ে বলেছেন, ‘আসলে অনেক সংবাদ পাঠিকা ও উপস্থাপিকার আশঙ্কা ছিল, তালিবানি ফতোয়া মেনে মুখ ঢেকে অনুষ্ঠান করলে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে তাঁদের কাজে আসতেই বারণ করে দেওয়া হবে। তাই নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্যই তালিবানি ফতোয়া অমান্যের পথে হেঁটেছেন মহিলা উপস্থাপিকারা।’ যদিও নির্দেশ অমান্যের জন্য মহিলা উপস্থাপিকাদের বিরুদ্ধে তালিবান সরকার চরম ব্যবস্থা নিতে পারে বলে মানবাধিকার কর্মীদের আশঙ্কা।