নিজস্ব প্রতিনিধি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যমে বেশ গুছিয়ে বিজ্ঞাপন চলছে, ‘মোদি জি কা পরিবার’(Modi Ji Ka Parivar) । এবার সেই বিজ্ঞপনের পাল্টা পথে হাঁটা দিল বাংলার(Bengal) শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। তাঁদের দাবি, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেশ উচ্চগ্রামে বলে চলেছেন, যে বিজেপির প্রার্থীরাও তাঁর পরিবার। সেই পরিবারের নমুণা এমনই যে দেখে যে কেউ মুখ লুকিয়ে ফেলবে। কেননা বাংলার ৪২টি কেন্দ্রের মধ্যে এখনও পর্যন্ত বিজেপি(BJP) তাঁদের ঘোষিত প্রথম দফার প্রার্থী তালিকায় যে সব প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তাঁদের মধ্যে অর্ধেক প্রার্থীরই(Candidates) রয়েছে ফৌজদারী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ। সেই নিয়ে নানা মামলার পাশাপাশি থানায় লিখিত অভিযোগও রয়েছে। বিজেপির এইরকম ১০জন ‘দাগী’ প্রার্থীকে নিয়েই এবার তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়ায় পাল্টা প্রচার শুরু করে দিল। এই ১০ জন হলেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, শান্তনু ঠাকুর, লকেট চট্টোপাধ্যায়, হিরণময় চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, নিশীথ প্রামাণিক, মনোজ টিগ্গা, গৌরি শঙ্কর ঘোষ এবং খগেন মুর্মু।
প্রথমেই আসা যাক নিশীথের কথায়। নিশীথ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। অমিত শাহের ডেপুটি। তিনি উনিশের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার কেন্দ্র থেকে বিজেপির সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হন। এবারেও তিনি কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হয়েছেন। তৃণমূলের তথ্য বলছে, নিশীথের বিরুদ্ধে ৪৪টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্র সরকারের জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র থেকে উনিশের ভোটে জিতে বিজেপির সাংসদ হন। এবারেও তিনি ওই কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ৩৮টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। উনিশের ভোটে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। এবারেও তিনি ওই কেন্দ্রেরই বিজেপি প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে ১৩টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যাওয়া এই নেতা নিজের বউকেই সাংবাদিক বৈঠকে ডিভোর্স দিয়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন। বউয়ের অপরাধ ছিল সে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। সেই সৌমিত্র এবারেও বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। তা৬র বিরুদ্ধে তৃণমূলের তরফে দাঁড় করানো হয়েছে তাঁরই প্রাক্তন বউ সুজাতা মণ্ডলকে। একই সঙ্গে তৃণমূলের তরফে তুলে ধরা হয়েছে যে সৌমিত্রের বিরুদ্ধে ২২টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। অভিনয় থেকে রাজনীতিতে আসা হিরণ ওরফে খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণময় চট্টোপাধ্যায় এবার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। সেটাও আবার টলিউডের সুপারস্টার ও তৃণমূলের প্রার্থী দীপক অধিকারী থুড়ি দেবের বিরুদ্ধে। সেই হিরণের বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি অপরাধের অভিযোগ।
চলে আসা যাক বাকি ৫ প্রার্থীর দিকে। আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে এবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন জেলারই মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্র থেকে উনিশের ভোটে জিতে সাংসদ হন বাম থেকে রামে আসা প্রার্থী খগেন মুর্মু। এবারেও তিনি ওই কেন্দ্রেই বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৬টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে এবারে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন জেলারই মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে একুশের ভোটে জয়ী বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষ। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যাওয়া এই নেতার বিরুদ্ধে ২৩টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন জেলারই ইংরেজবাজার বিধানসভা কেন্দ্র থেকে একুশের ভোটে জেতা বিজেপি বিধায়িকা শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ১টি অপরাধের অভিযোগ। অভিনেত্রী থেকে রাজনীতিতে আসা এবং তৃণমূল ঘুরে বিজেপিতে যাওয়া লকেট চট্টোপাধ্যায় উনিশের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে সাংসদ হয়েছেন। বিজেপি এবারেও তাঁকে ওই কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৫৯টি অপরাধের অভিযোগ।