নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের নয়া শিক্ষানীতি(New Education Policy of Bengal) সামনে আনল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। এই শিক্ষানীতি রূপায়ণের ক্ষেত্রে একদিকে যেমন জাতীয় শিক্ষানীতির(National Education Policy) কথা খেয়াল রাখা হয়েছে তেমনি রাজ্যে শিক্ষার পরিবেশের সঙ্গে তা যাতে খাপ খেয়ে যায় সেই বিষয়টিও নজরে রাখা হয়েছে। তাই এই নয়া শিক্ষানীতিতে যেমন জাতীয় শিক্ষানীতির কয়েকটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তেমনি রাজ্যের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই শিক্ষানীতি সামনে আনা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল বিশ্ব আদিবাসী দিবসে ঝাড়গ্রামে একটি সরকারি অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী যে ত্রিভাষা(Tri Language) নীতির কথা তুলে ধরেছিলেন, সেই ত্রিভাষা নীতি গ্রহণ করা হয়েছে ভাষাশিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যের শিক্ষানীতিতে। বিজ্ঞপ্তিতে বলেই দেওয়া হয়েছে, এলাকা ভিত্তিতে স্থির হবে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ভাষা। জোর করে কারোর ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না। ঠিক মুখ্যমন্ত্রী যেমনটি বলেছিলেন।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের শিক্ষা দফতরের দেওয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলা ছাড়াও উর্দু, সাঁওতালি, রাজবংশী, নেপালির মতো ভাষাকে প্রথম ভাষা হিসেবে মান্যতা দেওয়া হবে। তবে বাংলা ও ইংরাজি বাধ্যতামূলক। এছাড়া তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি, সংস্কৃতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের মতো জেলাগুলিতে প্রথম ভাষা হিসেবে যদি কেউ নেপালি পড়ে, তাহলে তৃতীয় ভাষা হিসেবে অন্তত বাংলা পড়তেই হবে। আসলে মাতৃভাষা হিসেবে বাংলাকে আরও গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, এবার থেকে প্রাথমিক স্তরে প্রথম শ্রেনীতে ভর্তি হতে গেলে তার আগে অন্তত ১ বছর প্রাক-প্রাথমিকে পড়তে হবে। তারপর প্রথম থেকে একদম অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এখনকার মতোই পড়াশোনা করবে পড়ুয়ারা। তবে অষ্টম শ্রেণি থেকে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা হতে পারে। নবম-দশম শ্রেণির শেষে হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে সেমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে আগ্রহী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে যে সব পড়ুয়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে, তাদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। সেক্ষেত্রে সেমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষার প্রথম ফল প্রকাশিত হবে ২০২৬ সালে।
তবে শুধু স্কুল বা কলেজে পড়াশোনা ব্যবস্থাই নয়, নয়া শিক্ষানীতিতে শিক্ষাদান নিয়েও বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। গ্রামশিক্ষায় জোর দিতে গ্রামে শিক্ষকতা(Teaching in Rural Schools) করার কথা বলা হয়েছে। তা নিয়োগের সময়ই শিক্ষককে জানাতে হবে। এর পাশাপাশি জাতীয় শিক্ষানীতিতে যে চার বছরের ইন্টিগ্রেটেড বিএড ডিগ্রি কোর্সের কথা বলা হয়েছে, সেটি মানা হচ্ছে না রাজ্যের শিক্ষানীতিতে। ২ বছরের বিএড কোর্সের পক্ষেই মত রাজ্যের। তবে জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে মিল রেখেই স্নাতক স্তরে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করছে রাজ্য।