নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরেও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে(Viswabharati University) অচলাবস্থা কাটছে না। ইতিমধ্যেই সেখানে বিক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের আন্দোলন(Student Agitation) দুই সপ্তাহেরও বেশি দিন পার হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় সোমবার বিকাল থেকে আবারও সেখানে পড়ুয়াদের হাতে ঘেরাও হলেন বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার(Registrar)। ঘেরাও হয়েছেন কয়েকজন অধ্যাপকও। রাতভর সেই ঘেরাও চলে। মাঝরাতেই তাঁদের ঘেরাও মুক্ত করতে আসে পুলিশ(Police)। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের শ্লোগানের মুখে পড়ে তাঁরা বাধ্য হন ফিরে যেতে। আর তার জেরে মঙ্গলবার সকালেও চলছে বিক্ষোভ, ঘেরাও। যদিও বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা কাউকে ঘেরাও করেননি। তাঁরা শুধু গেটের সামনে শুয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সব মিলিয়ে বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরালো হচ্ছে।
হস্টেল খোলা সহ তিন দফা দাবিতে বিশ্বভারতীতে চলছে পড়ুয়াদের আন্দোলন। ইতিমধ্যেই সেই আন্দোলন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ২ দফায় রায় দিয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই রায়ও মানছে না। এরই মধ্যে বিতর্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিশ্বভারতীর নয়া একটি সিদ্ধান্তের জেরে। সোমবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, বিক্ষোভের কারণে কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকলে তাকে অকৃতকার্য হিসেবে ধরা হবে। পরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আর মিলবে না। তবে অন্য কোনও কারণে পরীক্ষা দিতে না পারলে, সেক্ষেত্রে আগের নিয়মেই পরীক্ষা দেওয়া যাবে। এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। কার্যত তার মধ্যেই সোমবার বিকাল ৪টে নাগাদ বাংলাদেশ ভবনে বৈঠক করতে আসেন বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়াল ও কয়েকজন অধ্যাপক। আর সেই বৈঠক চলাকালীন সময়েই বাংলাদেশ ভবনের গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। কার্যত সেই সময় থেকেই মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ভবনেই(Bangladesh Bhawan) আটকে আছেন রেজিস্ট্রার সহ কয়েকজন অধ্যাপক।
রেজিস্ট্রার ও অধ্যাপকদের ঘেরাও মুক্ত করতে সোমবার মাঝরাতে বাংলাদেশ ভবনে আসে পুলিশ। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ ভবনের গেটে শুয়ে পড়ে শ্লোগান দিতে থাকায় পুলিশও পিছু হটে। পড়ুয়ারা অবশ্য এদিন দাবি করেছে তাঁরা কাউকে ঘেরাও করে রাখেনি। তাঁরা গেটের সামনে শুয়ে রয়ে রয়েছেন মাত্র। পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকলে অকৃতকার্য হিসেবে ধরা হবে এই যে সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতী নিয়েছে তা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। উপাচার্যকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা আমাদের দাবিতে অনড়। বিভিন্ন ভবনের পড়ুয়ারা আমাদের পাশে থাকতে ক্লাস ছেড়ে আসবে। পড়ুয়াদের এই বিক্ষোভের মাঝে সোমবার বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিস ও সেন্ট্রাল লাইব্রেরি কিছুক্ষণের জন্য খোলা হলেও পরে তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছে, তাঁদের কেউ পরীক্ষায় বসছে না। যতক্ষণ না তাঁদের দাবি মিটবে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। বাংলাদেশ ভবন ঘেরাও করে রাখার পাশাপাশি উপাচার্যের বাড়িও ঘেরাও থাকবে।