নিজস্ব প্রতিনিধি: তরজা অব্যাহত মেদিনীপুরের মাটিতে। তরজা অব্যাহত কাটমানি ইস্যুতে। তরজা অব্যাহত সাংসদ তথা অভিনেতা দেব(Deb) থুড়ি দীপক অধিকারী এবং বিধায়ক তথা প্রাক্তন অভিনেতা হিরণ(Hiran) চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে। চলচ্চিত্র সমালোচকদের মতে, টলিউডে দেবের উত্থানের পর থেকেই কার্যত রুপালি পর্দার জগৎ থেকে কার্যত হারিয়ে গিয়েছেন হিরণ। প্রথমদিকে তৃণমূলে(TMC) থাকলেও বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেননি। কিন্তু বিজেপিতে(BJP) যোগ দেওয়ার পর থেকেই হিরণের রাজনীতির কেরিয়ার বেশ তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্যতম মহকুমা শহর তথা রাজ্যের অন্যতম রেল শহর হিসাবে পরিচিত খড়গপুর(Kharagpur) থেকে হিরণকে প্রার্থী করে বিজেপি। তিনি সেখান থেকে জিতেও যান। আর এইবার দেবের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন তিনি। কালিপুজোর পর আবারও তিনি দেবকে নিশানা বানালেন কাটমানির প্রসঙ্গ টেনে এনে।
আরও পড়ুন নয়া নিয়ম প্রভিডেন্ট ফাণ্ডে, লাভবান হবেন চাকুরীজীবীরা
কালিপুজোর সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম মহকুমা শহর তথা দেবের নির্বাচনী কেন্দ্র ঘাটাল(Ghatal) একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ কটাক্ষ হেনেছিলেন দেবকে। বলেছিলেন, ‘বন্যার সময় ঘাটালের মানুষ যখন হাবুডুবু খায় তখন ঘাটালের সাংসদ দেব তাঁর গার্লফ্রেন্ড নিয়ে মালদ্বীপে ছুটি কাটায়। ঘাটালের মানুষের সমস্যা নিয়ে দেবের ভাবার সময় কোথায়? ২০১৪ সাল থেকে দেব ঘাটালের সাংসদ। সংসদে তাঁর উপস্থিতি ২০ শতাংশের নিচে।’ এরপরই ঘাটালে এসে হিরণের তোলা অভিযোগের জবাব দেন দেব। মনে করা হয়েছিল তারপর হয়তো হিরণের আক্রমণ বন্ধ হবে দেবের উদ্দেশ্যে। কিন্তু তা যে চড় করে হবে না সেটা আবারও বুঝিয়ে দিলেন হিরণ। সম্প্রতি তিনি একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কার্যত বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন সাংসদ দেবের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, দেবের সাংসদ তহবিল থেকে উন্নয়নের জন্য কোনও প্রকল্প পেতে হলে ৩০ শতাংশ কমিশন দিতে হয় আবেদনকারীকে। তিনি একথা জেনেছেন ঘাটালেরই একাধিক বরিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে।
আরও পড়ুন অশনিসঙ্কেত, ধরাশায়ী জোড়াফুল, নেপথ্যে বাম-বিজেপি
খড়গপুরের বিজেপি বিধায়কের এহেন দাবি ঘিরে এখন জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। হিরণের পাশে দাঁড়িয়ে এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট। তিনি জানিয়েছেন, ‘হিরণদার কাছে নিশ্চয়ই উপযুক্ত প্রমাণপত্র রয়েছে। তা না হলে তিনি বলবেন কেন? এর আগে হিরণদা দেবের বিরুদ্ধে গরুচোর এনামুলের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন। তার তো প্রমাণ রয়েছে। এনমুলের অ্যাকাউন্ট থেকে দেবের অ্যাকাউন্টে যে ৫ কোটি টাকা ট্রান্সফার হয়েছে তার প্রমাণ রয়েছে। এক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই প্রমাণ রয়েছে হিরণদার কাছে। আমরা বলতে পারি, সাংসদ দেব সাধুপুরুষ নন।’ হিরণের তোলা অভিযোগ নিয়ে দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এই বিষয়ে দেবের বর্তমান সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না জানিয়েছেন, ‘২০১৪ থেকে ২০১৯ কী হয়েছে আমি জানি না। ২০১৯-এর পর থেকে কারও সাহস নেই কোনও কাজ পেতে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ তোলার। কারও কাছ থেকে একটি টাকাও দাবি করা হয়নি, নেওয়াও হয়নি। চ্যালেঞ্জ করছি।’