নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জেলবন্দি অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলার বন্দী বাহুবলী নেতা মুখতার আনসারি। গত ২৮ মার্চ গভীর রাতে তিনি জেলের মধ্যে অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারান। শনিবার মুখতারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর জেলার মহম্মদাবাদে কবরস্থানে। আর সেখানে দেখা গেল সমর্থকদের বাঁধভাঙা ভিড়। ভেঙে পড়েছে পুলিশি ব্যারিকেট। কবরস্থানে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা।
উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে এক বিখ্যাত রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম মুখতার আনসারির। ঠাকুর্দা মুখতার আহমেদ আনসারি ছিলেন মহাত্মা গান্ধির ঘনিষ্ঠ সহচর। জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন। কাকা হামিদ আনসারি ছিলেন দেশের উপরাষ্ট্রপতি। যদিও উল্টোপথেই হেঁটেছিলেন মুখতার। নিজের গ্যাং তৈরি করেছিলেন। খুন, রাহাজানি, অপহরণ থেকে শুরু করে একাধিক মারাত্মক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। প্রায় ৫৪টির মতো মামলার আসামী ছিলেন। মউ থেকে পাঁচবার বিধায়ক হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মধ্যে বহুজন সমাজ পার্টির হয়ে দু’বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৫ সাল থেকেই জেলে বন্দি ছিলেন। একাধিক মামলায় তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাও শুনিয়েছিল বিভিন্ন আদালত। দীর্ঘদিন হরিয়ানার এক জেলে বন্দি ছিলেন।
উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পরে হরিয়ানা জেল থেকে তাকে না সরানোর আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখতার। আর্জিতে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন, উত্তরপ্রদেশের জেলে স্থানান্তরিত করা হলে তাকে খুন করা হতে পারে। যদিও সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট মুখতারকে হরিয়ানা থেকে উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়। গত মঙ্গলবারই জেলের ভিতর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বাহুবলী নেতা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। টানা ১৪ ঘন্টা বাদে ফের ফেরানো হয় বান্দা জেলে। সূত্রের খবর, গত ২৮ মার্চ পৌনে চারটে নাগাদ নিজের সেলেই বমি করতে-করতে অজ্ঞান হয়ে যান মুখতার। কিন্তু তাকে দীর্ঘক্ষণ বিনা চিকিৎসাতে ফেলে রাখা হয়। পরে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শেষরক্ষা হয় না। বৃহস্পতিবার রাতেই মুখতার প্রাণ হারান।