27ºc, Haze
Wednesday, 29th March, 2023 12:36 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: আমাদের দেশে এখনও হিন্দু-মুসলিমের ভেদাভেদ তুঙ্গে। ক্ষণে ক্ষণে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগেই থাকে। যা নিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ চিন্তিত। তবে তার মধ্যেও মাঝে মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভাইরাল হয় এমন একেকটি নজিরবিহীন দৃশ্য, যা দেখে মনে হয় ভারতের ঐক্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য এখনও বর্তমান। ভারতবর্ষ বহু ভাষাভাষি মানুষের দেশ, এখানে প্রতিটি সংস্কৃতির সঙ্গে সব জাতি মিলে-ঝুলে যায়। পুজো-পার্বণ হোক, সমস্ত রকম অনুষ্ঠান হোক তা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে একাকার হয়ে যান।
বিশেষত বাংলার আনাচে কানাচে এমন অসংখ্য উদাহরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। যার মধ্যে বেশিরভাগ উদাহরণ জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ট উৎসব দুর্গাপুজোকে ঘিরে। আজ তেমনই একটি সাম্প্রদায়িত সম্প্রীতির উদাহরণ আপনাদের দেবো, যেখানে নমাজ পাঠের মাধ্যমে দুর্গাপুজোর সূচনা করা হয়। হুগলির আরামবাগের সরকার বাড়ির বনেদি আনায় রয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরন।
শেষ সাড়ে তিনশো বছর ধরে এই পুজো শুরু হয় মুসলিম সম্প্রদায়ের নমাজের সুরের সঙ্গে। মুসলিমরা নমাজ পড়া শেষ করলে, তবে শুরু হয় আরতি, এখানকার মাতৃবন্দনা। এখানে এই রীতিই চলে আসছে প্রায় ৩৫০ বছর ধরে। এই পুজো শুরু করেছিলেন জমিদাম বাবুরাম সরকার। তাঁর জমিদারিতে ছিলেন প্রচুর মুসলিম মানুষ। বাবুরাম নিজেই, তাঁদেরকে নিজের সংস্কৃতির মধ্যে জায়গা করে দিয়েছিলেন। দুই সম্প্রদায় মিলে মিশে দুর্গাপুজোর আয়োজন করতেন। জাতপাতের বিচার না করে প্রগতিশীল চিন্তাধারা বজায় রেখেছিলেন বাবুরাম। সেই থেকে সপ্তমীতে নমাজ পাঠের মাধ্যমেই পুজোর শুরু করেন সরকার পরিবার। অষ্টমী, নবমীতেও নমাজ পড়ার পর শুরু হয় পুজো। এই পুজো মণ্ডপে আব্দুল মতলেব নামে এক স্থানীয় মুসলিম ৩০ বছর ধরে নমাজ পড়ে আসছেন। সরকার পরিবার আজও এই রীতি বজায় রেখেছেন।