নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘১০০ দিন, আবাসের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের কাছে আমরা বশ্যতা স্বীকার করব না। দিল্লি গিয়ে আন্দোলন করে রাজ্যের পাওনা ছিনিয়ে আনব। আমরা মানুষের পঞ্চায়েত গড়ব। দিল্লির কাছে গিয়ে ভিক্ষা চাইবে না বাংলা।’ মালদার মাটিতে দাঁড়িয়ে এই ভাষাতেই কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। এদিন তাঁর সভা ছিল মালদা(Malda) জেলার ইংরেজবাজার সদর মহকুমার কালিয়াচক এলাকার সুজাপুরের(Sujapur) হাতিমারির ময়দানে। সেখান থেকেই এদিন তিনি আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রের শাসক দলকে। শুধু তাই নয়, এদিন তিনি বাম-কংগ্রেস(Left-INC) ও বিজেপিকে এক আসনে রেখেই আক্রমণ শানিয়েছেন।
আরও পড়ুন শুভেন্দুর আচরণে ক্ষুব্ধ বিজেপি, ট্যুইট বাণ কুণালেরও
মালদা জেলার ২টি লোকসভা কেন্দ্রেই ২০১৯ সালের সাধারন নির্বাচনে হারতে হয় তৃণমূলকে। সেই নির্বাচনে উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্র গিয়েছিল বিজেপির দখলে আর দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্র গিয়েছিল কংগ্রেসের দখলে। একুশের ভোটে কিন্তু সেই ছবিটাই বদলে যায়। জেলা থেকে তো বটেই বাংলার বিধানসভা থেকেও বিলুপ্ত হয় কংগ্রেস। বিজেপি(BJP) অবশ্য জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৪টিতে জয়ী হয়। সেই জয়ের পিছনে ছিল আদিবাসী ও মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক। বামেদের কিছু ভোটও তাঁরা পেয়েছিল। কিন্তু জেলার সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক একচেটিয়া ভাবে তৃণমূলে চলে আসায় জেলার ৮টি আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল। সেই হিসাব মাথায় রেখেই এদিন আক্রমন শানিয়েছেন অভিষেক। বলেছেন, ‘২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তর মালদায় বিজেপি জিতেছিল। দক্ষিণ মালদায় জিতেছিল কংগ্রেস। একদিকে খগেন মুর্মু ও অন্যদিকে আবু হাসেম খান চৌধুরী। এরা গত চার বছরে একটা বৈঠকও করেননি মালদার উন্নয়নের জন্য। বাংলার যে দুজন কংগ্রেস সাংসদ রয়েছেন, তাঁরা কখনও বাংলার অর্থ বরাদ্দ নিয়ে সরব হননি। অধীর চৌধুরী আর আবু হাসেম খান চৌধুরীর কিছুই বলেননি।’
আরও পড়ুন হাওড়ায় খাতা খোলাই চ্যালেঞ্জ বিরোধীদের
মালদা জেলায় এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayat Election) তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। বাম আর কংগ্রেস সেখানে লড়াই করছে কার্যত নিজেদের অস্তিত্ব তুলে ধরতে। আর সেই কারণে তৃণমূলকে হারাতে এই ৩ দলের মধ্যে অঘোষিত জোটও হয়েছে জেলায়। সেই অলিখিত অঘোষিত বাম-বিজেপি-কংগ্রেস জোটকে এদিন নিসধানা বানিয়েছেন অভিষেক। বলেছেন, ‘একদিকে ভারতীয় জনতা পার্টি, অন্যদিকে নির্দল। বাংলায় তো বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস জোট করেছে। অনেক জায়গায় পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপড়া করে প্রার্থী দিয়েছে। যেখানে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। আবার যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে আবার বিজেপি সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। একদিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিহারে বিজেপিকে হারাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে চলার কথা বলছেন। আর রবিনহুড অধীর চৌধুরী বাংলার শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের ভাষায় কথা বলছেন। অধীরের নিরাপত্তার দায়িত্ব অমিত শাহের বাহিনী, দিদির পুলিশের ওপর আস্থা নেই, দাদার পুলিশে আস্থা আছে। দাদার নাম নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)।’
আরও পড়ুন কেষ্টগড় বীরভূমে, মমতা ঝড় তুলবেন মোবাইলে
এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানায় রেখে অভিষেক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি মানুষের গ্যারেন্টার। পটনার বিরোধী জোটের বৈঠকের পর বিজেপির মোদীর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। ১৬ দলের বৈঠক হয়েছে। তাই এখন এমন কথা বলছে। আমাদের লড়াই বিজেপি ও মোদীর বিরুদ্ধে নয়। আমাদের লড়াই, ভারতের সংবিধান ও গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই। প্রধানমন্ত্রী রিমোটের বোতাম টিপে বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ করেছেন। আর বাংলার মানুষ ইভিএমের বোতাম টিপে দেশের প্রধানমন্ত্রী বদল করে দেবেন।’