নিজস্ব প্রতিনিধি: মনে জোয়ার প্রেমের, শরীরে ঢেউ যৌবনের। দুইয়ের খিদেয় ছটফট করছিল নাবালিকা। তাই কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রেমিকের সান্নিধ্য পেতে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে নাবালিকা চলে গিয়েছিল ওপার বাংলায়। তবে সেখানে প্রেমিকের দেখা পেলেও তার সান্নিধ্যে সময় কাটানোর সুযোগ পেল না সেই নাবালিকা। ফিরে আসতে হল তাকে আবারও এপার বাংলায়। ভালবাসার মাসে মন ফাগুনের হাওয়ায় নাবালিকা ভেসে যেতে চাইলেও সে পথে কাঁটা বিছিয়ে দিল দুই দেশের আইন। সেই আইনের হাত ধরেই নাবালিকাকে শুক্রবার তাঁর বাবা-মার হাতে তুলে দিল বিজিবি, বিএসএফ ও পুলিশ।
জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমার গোয়ালপোখর থানার হরিয়ানা গ্রামের বাসিন্দা ১৭ বছরের ওই নাবালিকা ফোনে মিস কল দিয়ে আলাপ করেছিল ওপার বাংলার ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গির বাসিন্দা ২১ বছরের আব্দুল লতিফ ওরফে রকিবের সঙ্গে। সেই আলাপ থেকেই প্রেম। কিন্তু হয়নি মুখোমুখি দেখা। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে কথা বলা। এক হয়ে মিলে যায়নি দুই শরীর দুই মন। এদিকে ভরা বসন্তে সবাই যখন ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করছে তখন ভালবাসার টানে কাঁটাতারের এপারে ওপারে ছটফট করছিল দুই জীবন। শেষে ওই নাবালিকা স্থির করে নেয়, ভালাবাসার মানুষের সঙ্গে মিলিত হতেই হবে যে কোনও উপায়ে। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। বুধ রাতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মুড়িখাওয়া সীমান্ত হয়ে পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ১৭ বছরের ওই নাবালিকা। সেখানে গিয়ে সে শুরু করে রকিবের খোঁজ।
উদভ্রান্তের মতো ওই নাবালিকাকে তার প্রেমিকের খোঁজে ঘুরে বেড়াতে দেখে তেতুঁলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের সর্দার পাড়া গ্রামের হাসিনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ওই নাবালিকাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। খবর যায় থানাতেও। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসিনুরের বাড়ি থেকে নাবালিকাকে থানায় নিয়ে আসে বাংলাদেশ পুলিশ। এ দিকে, প্রেমিকা এসেছে জেনে প্রেমিক রকিবও তেঁতুলিয়া থানায় ছুটে আসে। দেখা হয় দু’জনের। তবে সেই দেখায় ছিল দূরত্ব। তাই মনের সান্নিধ্য পেলেও শরীরের মিলন হয়নি। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে শরীর কেঁপে কেঁপে ওঠেনি। মন বসন্তে ফাগুন হাওয়ায় প্রেম তাই পরিণতি পায়নি। এদিকে খবর যায় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি’র কাছেও। নিয়ম অনুযায়ী ঘটনার কথা বিজিবি থেকে জানানো হয় বিএসএফ-কে। তারপর হয় দুই বাহিনীর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং। শুক্রবার বিজিবি ওই নাবালিকাকে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ মেয়েটিকে তুলে দেয় পুলিশের হাতে। তারপর পুলিশই নাবালিকার বাবা-মাকে ডেকে তাঁদের হাতে মেয়েটিকে তুলে দেয়। রকিব রয়ে যায় ওপার বাংলাতেই।