নিজস্ব প্রতিনিধি: কেষ্টহীন কেষ্টগড়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। আগামিকাল অর্থাৎ ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি বীরভুম(Birbhum) জেলার সদর শহর সিউড়ির(Suri) বুকে প্রশাসনিক সভা করার পাশাপাশি আমজনতার হাতে সরকারি পরিষেবা তুলে দেবেন। সেই সঙ্গে ওই সভা থেকেই তিনি মোট ১৪১৬ কোটি টাকার ১,০৬৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিল্যানাস করবেন। এই ১.০৬৫টি প্রকল্পের মধ্যে ৭২৩টি প্রকল্পের মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন যা নির্মাণের খরচ হয়েছে ৭৩৬ কোটি টাকা। বাকি যে ৩৪২টি প্রকল্পের তিনি শিল্যানাস সাধন করবেন, সেগুলি রূপায়ণে ব্যয় হবে ৬৮০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ১৪১৬ কোটি টাকার প্রকল্পের উপহারডালি মুখ্যমন্ত্রী তুলে দিতে চলেছেন বীরভূম জেলাবাসীর হাতে। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে জেলার উন্নয়নের জোয়ার বইবে বলে প্রশাসনের দাবি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যে সব প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তার মধ্যে থাকছে ১৩০ কোটি টাকা দিয়ে নির্মীত নানা রাস্তা। এছাড়াও জেলার একাধিক সুস্বাস্থ্য সেন্টার উদ্বোধন সহ ক্লিনিক, হাসপাতালের ওয়ার্ড, ওটি রুমের উদ্বোধন করবেন তিনি। একই সঙ্গে জেলার নানান বিদ্যালয়ে ৩৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া নানা পরিকাঠামোরও উদ্বোধন হবে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে। জেলার পর্যটন মানচিত্রে মুখ্যমন্ত্রী একযোগে ১০কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কথা আগামিকালের সভা থেকে ঘোষণা করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি ৩৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বোলপুরে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের(Biswa Bangla University) উদ্বোধন সিউড়ির মঞ্চ থেকে করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও বোলপুর, সাঁইথিয়া, লাভপুরের জলসমস্যা সমাধানে অম্রুত প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় একসঙ্গে ৪০০কোটি টাকার কাজের উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে হবে। অন্যদিকে, ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুবরাজপুরের দমকল কেন্দ্রের উদ্বোধন হবে।
বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামিকালের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সংখ্যালঘু শ্রেণির উন্নয়ন, পঞ্চায়েত পরিকাঠামো উন্নয়ন, মৎস্য বিভাগের পরিকাঠামোয় বহু কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পগুলি জেলাবাসীরা উপহার পাবেন। একই সঙ্গে আগামিকালের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী রূপশ্রী, কন্যাশ্রী, সবুজসাথী প্রাপকদের হাতেও সুবিধা তুলে দেবে। তবে সব থেকে বেশি নজর থাকবে আগামিকালের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঢেউচা-পাঁচামির জমিদাতাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার পাশাপাশি সেই শিল্প(Deucha Pnachami Coal Mines Industry) নিয়ে কী বার্তা দেন সেইদিকে। মুখ্যমন্ত্রী জমিদাতাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলে সবমিলিয়ে নতুন করে চাকরিপ্রাপকদের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এবারে মুখ্যমন্ত্রী মূলত ঢেউচা-পাঁচামির বহু প্রতীক্ষিত ১২ ও ১৩ ধাপের জমিদাতাদের হাতেই নিয়োগপত্র তুলে দেবেন। বহু রাস্তা যা এতদিন ধরে আটকেছিল, তা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে যাবে মুখ্যম্নন্ত্রীর হাত ধরে। আর সেই সুবাদে লালমাটির বীরভূমের উন্নয়নের চালচিত্র এক ধাক্কায় অনেকটা এগিয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী যে রাজ্যের উন্নয়নের বিষয়ে কোনও কিছুতেই আপস করেন না, তা প্রকল্পের খরচ দেখলেই বোঝা যাবে। পিছিয়ে পড়া জেলা এখন উন্নয়নের নিরিখে উঠে এসেছে রাজ্যের প্রথম সারিতে। বাম আমলে এই জেলার রাস্তাঘাটের নাম শুনলেই সবাই নাক সিঁটকাতো। এখন রাস্তাঘাট নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ তুলতে পারবে না। জেলার প্রতিটি প্রান্তে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছেছে।